প্রজনন হার

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পরিসংখ্যান - পরিসংখ্যান ২য় পত্র | | NCTB BOOK

প্রজনন হার (Reproductive Rate) বা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জনসংখ্যার বৃদ্ধি বা হ্রাসের মাপকাঠি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি দেশের বা অঞ্চলের জনসংখ্যার গঠন ও বৃদ্ধির বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।

প্রজনন হার (Reproductive Rate) এর মূল ধারণা:

প্রজনন হার মূলত গর্ভবতী মহিলাদের মাধ্যমে সৃষ্ট সন্তানের সংখ্যা নির্ধারণ করে এবং তা জনসংখ্যার বৃদ্ধি বা হ্রাসের সাথে সম্পর্কিত। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান যেটি জনসংখ্যার ভবিষ্যত প্রবৃদ্ধি বা হ্রাসের পূর্বাভাস প্রদান করতে পারে।

প্রধান ধরনের প্রজনন হার:

১. মৌলিক প্রজনন হার (Total Fertility Rate - TFR):
এটি একটি নারী বা মহিলার জীবনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে, প্রজননযোগ্য বয়সের (১৫ থেকে ৪৯ বছর) মধ্যে তার গড় সন্তান ধারণের সংখ্যা নির্দেশ করে। যদি TFR ২.১ হয়, তা মানে জনসংখ্যা নিজস্ব স্থিতিশীল অবস্থায় থাকবে, কারণ একটি পরিবারে গড়ে ২.১ সন্তানের জন্ম হতে হবে যাতে পুরনো প্রজন্মের স্থান নতুন প্রজন্ম পূর্ণ করতে পারে।

২. নেট প্রজনন হার (Net Reproductive Rate - NRR):
নেট প্রজনন হার TFR এর একটি সংশোধিত সংস্করণ, যেখানে মৃত্যুর হার এবং অন্যান্য কারণে জন্মের পরে বেঁচে থাকার হারও যোগ করা হয়। এটি একটি দেশের বা অঞ্চলের জনসংখ্যার বিকাশের জন্য আরও নির্ভুল পূর্বাভাস দেয়।

প্রজনন হার থেকে বোঝা যায়:

  • প্রজনন হার বেশি: যদি প্রজনন হার বেশি হয়, এটি মানে যে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রজনন হার বেশি হয়।
  • প্রজনন হার কম: যদি প্রজনন হার কম হয়, তাহলে জনসংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে, এবং এটি উন্নত দেশগুলোর মধ্যে বেশি দেখা যায়।

প্রজনন হার এর গুরুত্ব:

  1. জনসংখ্যার বৃদ্ধির পূর্বাভাস: প্রজনন হার একটি দেশের বা অঞ্চলের ভবিষ্যত জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দেয়।
  2. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: এটি সরকারের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ে পরিকল্পনা করতে সাহায্য করে।
  3. বয়সভিত্তিক কাঠামো: এটি একটি দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের সংখ্যা এবং বৃদ্ধ জনগণের সংখ্যা নির্ধারণে সাহায্য করে।

সংক্ষেপে, প্রজনন হার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান যা জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার, কর্মক্ষম জনসংখ্যার পরিমাণ এবং দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় ভূমিকা রাখে।

Promotion